ওটি বয়-পিয়নরাই অ’বৈধ ক্লিনিকের মালিক

সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে অনেকেই ম্যানেজার, পিয়ন ও ওটি বয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। আর পরবর্তীতে তারাই বিভিন্ন অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এসবের প্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে সারাদেশের সব অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তথ্য দিতে সিভিল সার্জনদের নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। জানা গেছে, এসব তালিকা নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে চলতি মাসেই অভিযান চালানো হবে।

অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, অনুসন্ধান করে সারাদেশের সব অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক

ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তথ্য চাওয়া হয়েছে। এজন্য জরুরি বৈঠক করে একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলার সিভিল সার্জনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের একার পক্ষে এ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয় জানিয়ে প্রশাসন ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতা চান স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক।

এদিকে গত সোমবার সকালে রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে মানসিক রোগের চিকিত্সা নিতে গিয়ে হাসপাতালের কর্মীদের মারধরে এএসপি আনিসুল করিম নিহত হন। পুলিশ প্রাথমিকভাবে এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে উল্লেখ

করেছে। পরে জানা যায়, মাইন্ড এইড হাসপাতাল অবৈধ। এই ঘটনা নিয়ে সারাদেশে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

জানতে চাইলে ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, এএসপি আনিসুল করিম নিহতের ঘটনা দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদফতর অনুতপ্ত।

জানা গেছে, সারাদেশে চিকিত্সাসেবার নামে রমরমা ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে অর্ধলক্ষাধিক প্রতিষ্ঠান। আবাসিক বাড়িঘর, হাটবাজার, অলিগলিতে রয়েছে এসব অবৈধ, নামসর্বস্ব ও নিম্ন মানের বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

এসব অবৈধ প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসক না থাকলেও তাদের সিল-স্বাক্ষর দেয়া খালি প্রেসক্রিপশন থাকে। সিজার করা হয় ওটি বয়দের দিয়ে।

এতে অনেক শিশু বিকলাঙ্গ হয়, অনেকে মারাও যায়। এভাবে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনদের। আর এসব অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিকে অপচিকিত্সায় কেউ মারা গেলে কিংবা কোনো দুর্ঘটনা ঘটলেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের শুরু হয় তদারকি।

এর আগে গত আগস্টে দেশের সব লাইসেন্সপ্রাপ্ত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাড ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য চেয়ে সব বিভাগীয় পরিচালক ও জেলা সিভিল সার্জনদের চিঠি দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর।

এছাড়া যেসব বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাড ব্যাংক লাইসেন্স ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে তাদের লাইসেন্স নবায়নের জন্য ২৩ আগস্ট সময় বেঁধে দেয়া হয়।